BANGLA  কেন আমরা 'হু'এর চুক্তির বিরোধিতা করব ?

 
-      ডাঃ মায়া ভালেচা

মজা হচ্ছে, একটি আন্তর্জাতিক মহামারী চুক্তি হতে চলছে, এতবড় একট ঘটনা অথচ সরকার আমাদের জানানোর তোয়াক্কা করেনি। যেহেতু হু-এর প্রধান বিজ্ঞানী একজন ভারতীয় ফলে শুধুমাত্র তার বিবৃতি মারফৎ আমরা জানলাম যে একটি আন্তর্জাতিক মহামারী চুক্তি হতে চলছে এবং বেশিরভাগ দেশ তাতে একমত হয়েছে।

 

যদিও সরকার হু’র সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মহামারী চুক্তিটি এগিয়ে যাওয়ার আগে খসড়াটি জনসমক্ষে আলোচনা করার কোনও ইঙ্গিত দেখায়নি, তবুও এটি আমাদের পক্ষে বোঝা এবং আলোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদের স্বাস্থ্যকে সরাসরি প্রভাবিত করবে এবং এটি ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের দ্বিতীয় পর্ব হতে চলেছে।

 

মহামারী সংক্রান্ত মৌলিক জ্ঞান বা এমনি সাধারণ জ্ঞান ছাড়াও, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে কেন এই চুক্তির বিরোধিতা আমাদের করতে হবে। প্রথমত, হু যখন তৈরি হয়েছিল, সেইসময়ের  হু আর আজকের হু-এর মধ্যে মৌলিক তফাৎ ঘটে গেছে। হু-এর ফাণ্ডিং বা আর্থিক সাহায্যের চরিত্রের মৌলিক পরিবর্তন ঘটে গেছে। দ্বিতীয়ত, পুরো চুক্তিটি বন্ধ দরজার আড়ালে আলোচনা করা হচ্ছে, যেখানে সদস্য দেশগুলির প্রতিনিধিরা আছেন, অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা আছেন, বৃহৎ কর্পোরেশনের বিপুল অর্থে তৈরি নানা এনজিও’র প্রতিনিধিরা আছেন, কিন্তু সাধারন মানুষ? না, তাদের কোনও প্রতিনিধি নেই। আমরা জনগণ, আমরা তাদের কাছ থেকে মাত্র কয়েকটি বিবৃতি মারফত যা জানার জানতে পারছি। তৃতীয়ত, Covid-19 পর্বের সময় আমাদের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের কীভাবে একেবারেই উপেক্ষা করা হয়েছে। তাদের আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র জনসম্পদই নষ্ট করেছে তাই নয় বরং মানুষের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যকে ধ্বংস করেছে। পূর্বে সোয়াইন ফ্লু পর্বের সময়ও এটি বোঝা গেছিল, যে হু কীভাবে একটি আপসকামী সংস্থা হিসেবে কাজ করে।

 

হু’র মহামারী চুক্তি মহামারী-কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাকেই গুরুত্ব দেয় না ঃ

 মহামারী আঞ্চলিক কারণ দ্বারা চালিত হয়। এই কারণগুলি ঘুরেফিরে ভূগোল, জলবায়ু, জনসংখ্যার ঘনত্ব, ডেমোগ্রাফি যেমন বিভিন্ন বয়সের প্রোফাইল, স্বাস্থ্যের অবস্থা, যেমন স্থুলতা বা ওবেসিটি’র মাত্রা, স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থা, নগরায়ন এবং অভিবাসন দ্বারা নির্ধারিত হয়। উদাহরণ স্বরূপ, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ হু’এর নির্দেশিকা অনুসরণ করা সত্ত্বেও, কোভিড-১৯-এর প্রভাব মহাদেশগুলিতে ব্যাপকভাবে ভিন্ন ভিন্ন হয়েছে।

 

হু'-এর বদলে যাওয়া চরিত্র ঃ

 এককালে হু-এর আর্থিক অনুদান ছিল হু-এর সদস্য দেশগুলির দ্বারা তাদের জিডিপির অনুপাতে। ২০০০ সাল নাগাদ ব্যবস্থাটা আমুল বদলে গেল। বিভিন্ন প্রজেক্টের ভিত্তিতে স্বেচ্ছায় অনুদান শুরু হল। ফলে ক্রমশঃ ব্যাপারটা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির ছত্রছায়ায় গিয়ে পৌঁছল, অর্থাৎ হু-এর অর্থায়ন সম্পূর্ণ বিভিন্ন ফার্মা কোম্পানির হাতে পৌঁছে গেল।  কিভাবে শেষ পর্যন্ত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলি দ্বারা অর্থায়ন করা হয় যা নীচে দেওয়া তথ্য থেকে স্পষ্ট৷ সুতরাং, হু-এর নীতি এবং সিদ্ধান্তগুলি ২০০০ সালের পর থেকে একেবারেই ফার্মা কোম্পানিগুলোর স্বার্থে চালিত।

 

"মূল্যায়িত তহবিল, বর্তমানে হু’র বাজেটের প্রায় 20%, GDP-এর উপর ভিত্তি করে, সমস্ত 196টি বর্তমান সদস্য রাষ্ট্রের জন্য মূল্যায়ন করা হয়েছে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ দ্বারা সম্মত হয়েছে। অবশিষ্ট বাজেটের বেশিরভাগটুকু স্বেচ্ছাসেবী অবদান থেকে প্রাপ্ত।

যদিও বেশিরভাগ গ্লোবাল ফান্ড সরকার থেকে আসে, কিন্তু প্রতি বছর $250 মিলিয়ন আসে BMGF (বিল অ্যান্ড মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন) থেকে। একইভাবে, অন্যান্য সংস্থা যেমন ইউনিটাইড ডাব্লুএইচও-এর ঐতিহ্যগত ফোকাসের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের দিকগুলিকে অর্থায়নের জন্য উত্থিত হয়েছে। বর্তমান হু মহামারী প্রতিক্রিয়ার জন্য আরও দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষ তাৎপর্যপুর্ণ। 2000 সালে, ভ্যাকসিন এবং ইমিউনাইজেশনের জন্য তৈরি হয়েছিল গাভি। (গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন)। এই গাভি প্রাথমিকভাবে তৈরি করা হয়েছিল  টিকা সংগ্রহ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলিতে প্রচার এবং অর্থায়নের জন্য। গাভি এইভাবে অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যসেবার সাথে বৃহৎ আকারের ওষুধ উৎপাদনব্যবস্থাকে সংযুক্ত করে ফেলল। আলমা আটার ঘোষণা ছিল পরিকল্পিত স্বাস্থ্যের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। অথচ তার পরিবর্তে শুধুমাত্র ভ্যাকসিন সরবরাহের উপর মনোনিবেশ করা শুরু হল। গাভির সবচেয়ে বড় আর্থিক সাগায্য আসে হ্যাঁ, সেই BMGF (বিল অ্যান্ড মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন) থেকেই।

মহামারী ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদিকে মোকাবিলা করারা যে ব্যবস্থা বা প্রস্তুতি, পিআইপি ফ্রেমওয়ার্ক, (প্যান্ডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রিপেয়ার্ডনেস), এটি কর্পোরেট-ভিত্তিক বৃহত্তম আর্থিক অনুদানকারী। এগুলো শুধুমাত্র বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলির দ্বারা চালিত হয়। যেমন Sanofi Pasteur ($55,252,737), GlaxoSmithKline (GSK) ($53,132,053), Hoffmann - La Roche and Co. Ltd. ($51,073,654), Seqirus ($17,876,129) and Novartis ($15,292,743)."

 

https://www.pandata.org/wp-content/uploads/PANDA_WHO_ReestablishingColonialism.pdf

 

চুক্তি নিয়ে স্বচ্ছতা এবং গণবিতর্কের অভাব ঃ

 হু’র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। তিনি বলেছেন, “ভবিষ্যতে মহামারী প্রতিরোধ, প্রস্তুতি এবং প্রতিরোধ পরিচালনার জন্য একটি খসড়া আন্তর্জাতিক মহামারী চুক্তি আঠার মাসের মধ্যে আলোচনার জন্য প্রস্তুত হবে।“

স্বামীনাথনের বিবৃতিটি 21শে জুলাই, 2022 সালে INB এর ব্যুরো দ্বারা একটি কার্যকরী খসড়া পেশ করার পরে এসেছিল। বর্তমান মহামারীকে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে হু’র সদস্য রাষ্ট্র এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে ইনপুটগুলি  নিয়ে এই খসড়া সংকলন করা হয়েছিল।

"হু’র সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থার পক্ষে ছিল। কিন্তু সেই ব্যবস্থা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল,"। একটি সংস্থা জানাচ্ছে, যে ওই সংস্থাকে ওই INB বৈঠকের বন্ধ দরজার বাইরেই অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছে কেননা, গোটাটাই গোপনীয় সামাজিক উদ্যোগ।

শুধুমাত্র রাশিয়া খসড়াটিতে "আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক সুপারিশের" বিরোধিতা করে। তবেঁ প্রস্তাবিত সুপারিশের পক্ষে ছিল বলে সংস্থাটি দাবি করেছে""

https://www.downtoearth.org.in/news/governance/global-pandemic-treaty-soumya-swaminathan-promises-draft-in-18-months-84351

 

খসড়াটি আমরা এখন পড়তে পারি কিন্তু মন্তব্য করা যাবে না। খসড়ায় অনেক আপত্তিকর বিষয় রয়েছে।

 

• প্রথম এবং সর্বাগ্রে, এটি আইনত বাধ্যতামূলক হবে এবং আমাদের দেশের নিয়মগুলি সেই অনুযায়ী পরিবর্তিত হবে বা সরকার নির্লজ্জভাবে এটি ছাড়াই বাধ্যতামূলক করতে পারে।

 

• মহামারী প্রস্তুতির নামে, সরকারগুলি কোভিড পর্বের 2 বছরে কোটিপতিদের তৈরি করা জিনিসগুলিতেই জাতীয় সম্পদ ব্যয় করেছে। ওই ২ বছরে  কোটিপতিদের সম্পদ 30% বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন এক রোগের জন্য মানুষের অর্থ এইভাবে নয়ছয় করা হল,  যে রোগের সংক্রমণে মৃত্যুর হার মাত্র ০.০৫%। হ্যাঁ,  সেই রোগের মোকাবিলার নামে  সরকারগুলি বেসরকারী নির্মাতাদের কাছ থেকে টেস্টিং কিট, পিপিই কিট জিনোম সিকোয়েন্সিং, ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য ওষুধ কিনেছে।

 

এই চুক্তিতেও সেই একই কথা বলা হয়েছে। এটি স্পষ্ট যে  স্বাস্থ্যের সত্যিকারেরউন্নতির জন্য যে বাজেট তা খরচ করা হবে এইসব প্রচারের জন্য।

 

• নজরদারি হল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যার উপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করবে।

 

• বিদেশী বিশেষজ্ঞদের প্রবেশাধিকার প্রদান করা আমাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে বহিরাগত হস্তক্ষেপ বৃদ্ধি করবে।

 

• নতুন ওষুধ (পুরোপুরি পরীক্ষা করা হয়নি এমন ওষুধ?) অনুমতি দেবার জন্য নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করতে হবে।

 

• বেসরকারি ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।  এবং তাই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক বিষয়ে তাদের পরামর্শ নেওয়া বা তাদের নির্ধারক ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে!

 

• সবচেয়ে উদ্বেগজনক হল, এমন এক সিদ্ধান্ত  যা ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করাও হয়েছে তা হল, মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য বা বিকৃতকরণের মোকাবিলা করা। কোভিডের সময় আমাদের অভিজ্ঞতা হল যে দীর্ঘ অভিজ্ঞ, সিনিয়র ডাক্তার, ক্ষেত্রবিশেষজ্ঞদের অনেক পরিণত অভিমত যখন মেইন্সট্রিম মূলধারার বর্ণনার বিরুদ্ধে ছিল, তখন সেই কণ্ঠ রুদ্ধ করার জন্য, স্তব্ধ করে দেবার জন্য মিডিয়া মোগল কুৎসিতভাবে সেন্সর করা শুরু করেছিল। মূলধারার সঙ্গে সঙ্গতীহীন হলেই তা মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, বিকৃত বলে গণপরিসরে আলোচনাই নিষিদ্ধ হয়েছিল। সঙ্গে ছিল কন্সপিরেসি তত্ত্বের উপস্থাপনা।

 

• যদিও লিঙ্গ, জাতি ইত্যাদির মতো অন্যান্য সামাজিক কারণগুলি উল্লেখ করা হয়েছে, তবে আর্থ-সামাজিক মর্যাদা বাড়ানো, পুষ্টি যা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ সেগুলির কোনও উল্লেখ নেই৷

 

• এমনকি সার্বভৌমত্বের কথা উল্লেখ করার সময়, খসড়াটি আপনাকে আপনার সার্বভৌমত্ব নয়, আপনার সার্বভৌমিত্বের সীমাবদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দেয়। এবং সেই সার্বভৌমিত্ব কী কতটা, তা তারাই  সংজ্ঞায়িত করবে।

 

“ সার্বভৌমত্ব।।-  জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতি অনুসারে, জনস্বাস্থ্যের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ এবং পরিচালনা করার সার্বভৌম অধিকার রাষ্ট্রগুলির রয়েছে। বিশেষ করে মহামারী প্রতিরোধ, প্রস্তুতি এবং তাদের নিজস্ব নীতি অনুসারে প্রতিক্রিয়া , এবং তাদের এখতিয়ার বা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকা ক্রিয়াকলাপগুলি অন্যান্য রাজ্য এবং তাদের জনগণের ক্ষতির কারণ না হয় তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রগুলির রয়েছে,।"

অর্জিত অগ্রগতির ভিত্তিতে উপস্থাপিত, আন্তঃসরকারি আলোচনাকারী সংস্থার দ্বিতীয় বৈঠকে বিবেচনার জন্য কার্যকারী খসড়া।

সোয়াইন ফ্লুর সময় হু-এর ভূমিকাঃ

"ইউরোপের কাউন্সিলের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে একটি "মহামারী যা সত্যিই কখনও ছিল না"- তার অযথা অযৌক্তিক ভয় দেখিয়ে হু জনসাধারণের বিপুল পরিমাণ অর্থের নয়ছয় করেছে। এবং H1N1 ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের পেছনে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর প্রভাব নিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।"

http://timesofindia.indiatimes.com/articleshow/6013135.cms?utm_source=contentofinterest&utm_medium=text&utm_campaign=cppst

রিপোর্টে বলা হয়েছে, "জাতীয় সরকার, হু এবং ইউরোপিয়ান ইউনিওনের এজেন্সিগুলো এমন কর্মকাণ্ডের জন্য দোষী ছিল যা "বড় অঙ্কের জনসাধারণের অর্থের অপচয়, এবং ইউরোপীয় জনগণের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে অযৌক্তিক ভীতি ও ভয়ের কারণ হয়েছিল।"

https://www.bmj.com/content/340/bmj.c3033.full

"এই পদক্ষেপটি হু, ফার্মা ইন্ডাস্ট্রি, এবং একাডেমিক বিজ্ঞানীদের মধ্যে ড্রাগ দুর্নীতির একটি "গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল"। এটি জনসাধারণের মধ্যে স্বচ্ছতার জন্য একটি দীর্ঘ-অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যা স্থায়ীভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এমনকি মৃত্যুর কারণও হয়েছে।"

https://healthcare-in-europe.com/en/news/european-parliament-to-investigate-who-pandemic-scandal.html

কোভিডের সময়েও আমাদের অভিজ্ঞতা এই বাণিজ্যিক বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ স্বার্থ থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য আমাদের বিশ্বাসকে পুনরায় দৃঢ করে।

0.05% সংক্রমণ মৃত্যুর হার সহ একটি রোগের জন্য, যেখানে 67.6% প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ইতিমধ্যেই অ্যান্টিবডি রয়েছে, এবং 99.5% জনসংখ্যার পুরো দুই বছরে কারও কখনও কোভিডের কোনও উপসর্গ হয়নি, হু’র পরামর্শে পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার টিকা দেওয়ার অভিযান শুরু করা হয়েছিল, যখন অনেক ভারতীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কখনই সারা দেশে লকডাউন, 45 বছরের কম বয়সীদের জন্য ভ্যাকসিনের পরামর্শ দেননি,  (https://economictimes.indiatimes.com/news/politics-and-nation/shots-for-18-44-yr-group-was-a-political-decision/articleshow/82812610.cms )

এই স্বেচ্ছাচার তুঙ্গে উঠল যখন, ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের উপেক্ষা করে, কোনও স্বচ্ছ গণ বিতর্ক ছাড়াই শিশুদের জন্য ভ্যাকসিন চালু করা হয়েছিল। কোভিড থেকে কোনও ঝুঁকি না থাকা সত্ত্বেও শুরু হয়েছিল কেন? কারণ অন্যান্য দেশে শিশুদের ভ্যাক্সিন দেওয়া শুরু হয়েছিল, NTAGI-এর স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও। এমন একটি পদার্থের ইনজেকশন দেওয়ার জন্য জনসাধারণের অর্থের অপচয় করা হল, যার দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা ডেটা তো জানা যায়ই না, এমনকি স্বল্পমেয়াদী ডেটাও ট্রায়ালের সময় এত ছোট নমুনা যে তার ওপর নির্ভর করা যায় না।

জলবায়ু, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং জনসংখ্যার অবস্থার উপর নির্ভর করে সমস্ত দেশের স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা, অগ্রাধিকার ভিন্ন ভিন্ন হয়। আমাদের দেশে পশ্চিমা মডেল চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে যা আসলে “চিকিৎসা সাম্রাজ্যবাদ” এবং আমাদের দেশের জন্য তা ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে।

২০০৩সালে SARS Cov (2003) এর পরেই IHR স্বাক্ষর করাটা অপ্রত্যাশিত ছিল। কারণ একটি তথাকথিত অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাস সারা বিশ্বে মোট 8098 জনকে সংক্রামিত করেছিল এবং মোট 774 জন মারা গেছিল। এর উৎপত্তি দেশ চীনে - 5327 সংক্রমণ এবং 349 জন মারা গেছিল। নভেম্বর, 2002-এ শুরু হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল। সমস্ত আন্তর্জাতিক ট্রাফিক চালু থাকা সত্ত্বেও, মার্চ 2003 এর মধ্যে অন্যত্র মাত্র কয়েকটি ঘটনা জানা গিয়েছিল।

হু’র এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা এবং এ ধরনের আন্তর্জাতিক নির্দেশের ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য আইন প্রণয়ন করা হবে ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী।

                    ভাষান্তরঃ অরূপ শঙ্কর মৈত্র

লেখক পরিচিতিঃ

ডাঃ মায়া ভালেচা, এমডি (গাইনি) ভোদোদরা, গুজরাটে  থাকেন।  ছাত্রজীবন থেকেই তিনি  বাম রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি বাম দৃষ্টিভঙ্গি সহ গুজরাটের নবনির্মাণ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন, ২০০২ সালে সক্রিয়ভাবে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং একজন কট্টর নারীবাদী ছিলেন। নারীদের পোশাক কীভাবে নিপীড়ক প্রকৃতির, তা নিয়ে তিনি তার গবেষণা কাজ করেছেন। তিনি বরোদা এবং সুরাটে বিকল্প বাসস্থান ও জীবিকার সুযোগ ছাড়াই বস্তি ধ্বংসের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন এবং সংগ্রাম সফলভাবে পরিচালিত হয়েছিল।

তিনি ২০০০ সাল থেকেআর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুরোপুরি জড়িত হওয়ার জন্য, গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে চিকিৎসার পেশা থেকে বিরত হন। লকডাউনের শুরু থেকেই তিনি, একদিকে ওষুধ শিল্পসহ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার জাতীয়করণের জন্য জনমত গড়ে তুলেছেন এবং অন্যদিকে কোভিড-১৯ সম্পর্কে সত্য প্রচার করছেন।

 

 

Comments

Popular posts from this blog