কোভিড কালের জুলুম-তন্ত্র

         বামেদের মুখে কেন শাসকের বুলি?

        মূল রচনা: ক্রিস আর      ভাষান্তর: গৌতম দাস

[ইংল্যান্ডের লেফট লকডাউন স্কেপটিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত দা লেফট এন্ড কোভিড নিবন্ধটির প্রথম কিস্তির অনুবাদ পাঠকদের অনুরোধে প্রকাশ করা হলো। অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং ক্ষুরধার বিশ্লেষণে এখানে বলা হয়েছে, “বামেরা শুধু সক্রিয় হতেই ব্যর্থ হয়নি। তারা ব্যর্থ হয়েছে কৌতুহলী এবং অনুসন্ধানী হতে। তারা ব্যর্থ হয়েছে প্রতিবাদী আখ্যানকে বুঝতে।……সমকালের প্রেক্ষাপটে যে অপূর্ব ইতিহাস রচিত হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া থেকে বামেরা নিজেদের সম্পূর্ণভাবে বিযুক্ত রেখেছে। গণআন্দোলনের এমন অভিনব এবং সৃষ্টিশীল প্রকাশভঙ্গি দেখেও গত তিন বছরে তাদের হতশ্রী অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।……তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আধুনিক কালের ইতিহাসে শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে সর্ববৃহৎ আক্রমণের উত্তরে বামেরা তাদের লাল টুপির বদলে আনুগত্যের নীল মুখোশ মুখে এঁটে নিয়েছে। বিচার বিবেচনার এই ধ্বংসাত্মক ভুলের পর প্রশ্নটা থাকছে না বামেদের পুনর্জাগরণ হবে কিনা। বরং প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে এইভাবে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা উচিত হবে কিনা”।]

           


            এই প্রবন্ধে বাম বলতে বোঝানো হয়েছে সেই সব রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠন ও নানা গোষ্ঠী এবং গোষ্ঠীর অন্তর্জাল যাদের মধ্যে রয়েছেন ট্রেড ইউনিয়নপন্থীরা, কিংবা তাদের সক্রিয় সদস্য প্রচারক এবং লেবার পার্টির সদস্যরা। এছাড়াও তাদের মধ্যে রয়েছেন নানা ধরনের ট্রেড ইউনিয়ন, ট্রেড কাউন্সিল এবং স্টপ দা ওয়ার, পিপলস এসেম্বলি, এক্সটিংশন রেবেলিয়ন এইরকম নানা ধরনের মোর্চা এবং গোষ্ঠী যাদের সঙ্গে ২০২০ সালের মার্চ মাসের আগে পর্যন্ত আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি, মিছিলে হেঁটেছি, প্রচার পত্র বিলি করেছি এবং দশকের পর দশক ধরে নানা পিকেটিং আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। তারপর থেকে তাদের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব ক্রমেই বেড়েছে। এক কথায় বলতে গেলে বাম শিবির মানে সব ধরনের সমাজতান্ত্রিক বাম ও প্রগতিশীল শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে বোঝায়। এইভাবে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কিছু বিপদ থাকে, তবে কোভিড- কালে শাসকের সঙ্গে ঐক্যমত্য দেখে তাদের সহজেই চিনে নেওয়া যায়।

২০২০ সালের মার্চ মাসে, সারাদেশে লকডাউন এর নামে যখন শাসক শ্রেণী জনগণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল সেটা ছিল আসলে জনজীবনকে তালাবন্দি করে ফেলার অপকৌশল। এর বিরুদ্ধে বামপন্থী রাজনীতি এবং শ্রমিক আন্দোলনে কোন প্রতিরোধ বা জঙ্গিপনা - কিছুই দেখা গেল না। পরিবর্তে আমরা দেখলাম শাসনতন্ত্রের কাছে তাদের আনুগত্য এবং আত্মসমর্পণ।

কুটকৌশলের দিক থেকে বামেদের চেয়ে বরিস জনসন অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। হার্ড ইমিউনিটি বা গোষ্ঠী অনাক্রমতার কথা বলে তিনি বললেন- যতদিন না এই হার্ড ইমিউনিটি সমাজে তৈরি হচ্ছে আমাদের ঘরের ভিতরেই থাকতে হবে। ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গে তার এই লকডাউন নীতি একটি প্রগতিশীল প্রকল্পে পরিণত হলো। রাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা জনসমক্ষে তুলে ধরার বদলে বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা অন্য এক ধুয়ো তুলেছিল," আমরা কি গবাদি পশু নাকি যে চিরকাল ঘরেই আটকে থাকবো?"। কাজেই পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তারা ইনজেকশন এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো।

প্রতিটি মানুষই জানেন এবং বোঝেন যে সার্স-কোভ-২ কে কেন্দ্র করে কর্পোরেট এবং রাষ্ট্রের মিলিত আখ্যান কে বামেরা সম্পূর্ণরূপে গলাধঃকরণ করেছিল। সরকারের অবস্থানের সঙ্গে তাদের একমাত্র বিরোধ এই ছিল যে তারা দাবি করছিল কঠোরতর, দ্রুততর এবং দীর্ঘতর লকডাউন। তাদের এই অবস্থানের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাচ্ছিল শূন্য কোভিডে পৌঁছবার উন্মত্ত কর্মসূচি।

বামেরা স্বেচ্ছায় এবং সচেতনভাবে ট্রাক এন্ড ট্রেস অর্থাৎ নজরদারি চালাও এবং খুঁজে বার করো- এই শয়তানি প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিল। অতি উৎসাহিত হয়ে তারা অনলাইনে দারুনভাবে সক্রিয় হয়ে প্রকৃত মজুরির বদলে রাষ্ট্রের উপর নির্ভরতার পক্ষে সওয়াল করছিল। তাদের যে আচরণ সবচেয়ে বেশি উৎকট এবং নিন্দা জনক মনে হচ্ছিল সেটা হচ্ছে কমরেড সুলভ আনুগত্যে তারা জামার হাতা গুটিয়ে শুধু একটি নয়, চার চারটি পরীক্ষামূলক ইনজেকশন এর জন্যই অপেক্ষা করছিল। একই সঙ্গে জৈব নিরাপত্তার আড়ালে রাষ্ট্রীয় জুলুমকে তারা অম্লান বদলে মেনে নিচ্ছিল।

 

শ্রেণী যুদ্ধের এই নিষ্ঠুরতম নয়া অধ্যায়ের উন্মেষ কালে, বামেরা অত্যাচারীর হাত ধরেছিল। প্রায় ১০০ বছরের ব্যবধানে তাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ হাজির হয়েছিল তাতে তারা ডাহা ফেল করেছে। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বলশেভিক গোষ্ঠীছাড়া ইউরোপের প্রায় সমস্ত বাম দলগুলি যুদ্ধবাজদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। সেই বিপদজনক ভুল পদক্ষেপের আরো একবার পুনরাবৃত্তি হল।

 

প্রয়োজনের মুহূর্তে বামেরা কোথায় ছিল?

২০২০ সালের গ্রীষ্মের প্রাক্কালে, লকডাউন থেকে যখন একের পর এক সংকট উদ্ভূত হচ্ছে, তখন প্রতিটি প্রয়োজনীয় এবং বৃহত্তর ইস্যুতে বামেরা মৌনতা অবলম্বন করছিল। যেভাবে পরিকল্পিত উপায়ে বিপুল বেকারত্ব সৃষ্টি হল, পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার একটি দৈনন্দিন ঘটনায় পরিণত হলো, সব ধরনের নির্বাচন মুলতুবি করে দেওয়া হলো, মানুষের স্বাধীন চলাচলের উপর স্বৈরতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো, কো- ল্যাটারাল ড্যামেজ এর নামে হাজার হাজার মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেওয়া হল, রাষ্ট্রের নজরদারি তীব্রতর হল - এসবের কোন একটিরও বিরুদ্ধে, বামেদের মধ্যে ন্যূনতম কোন আওয়াজ উঠল না। এমনকি তাদের মধ্যে কোন মৃদু প্রতিবাদ পর্যন্ত দেখা গেল না। এটাকে কি বলবেন, শুধুই অজ্ঞতা? যদি তাই হয়, তবে সেই ব্যাখ্যার অতীত অপরিসীম অজ্ঞতা প্রথম লকডাউন শুরু হবার পর থেকে আজ পর্যন্ত, টানা তিন বছর ধরে অদ্ভুতভাবে অটুট রয়েছে। এই সময়কালে বামেদের ব্যর্থতার ছবিটা এতটাই ব্যাপক এবং কলঙ্কিত যে তাকে সময়ের পটচিত্রে হুবহু তুলে ধরা বেশ কঠিন। তবুও তাদের অগৌরবের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করতেই হয়ঃ

২০২০ সালের মে মাসে, দা ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার সহ-সম্পাদক লিখেছিলেন: এ্যান্টি-ভ্যাক্সার অর্থাৎ ভ্যাকসিন বিরোধীদের জন্য যা যা আমাদের করার আছে সেটা হচ্ছে: ‘কোন কর্মসংস্থান নয়, কোন স্থানে প্রবেশাধিকার নয়, এমনকি জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার দরজা তাদের জন্য খোলা নয়’। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে দা ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় ভ্যাকসিন অনিচ্ছুকদের বলা হয়েছিল "সমাজের পক্ষে একটি প্রাণঘাতী বোঝা যার দায় নিতে আমরা অপারগ"। এছাড়াও অন্যান্য রুচিশীল পত্রপত্রিকাতে যখন এই জাতীয় অশালীন বাক্যের ফুলঝুরি ফোটানো হচ্ছিল, তখন কিন্তু না কোন বামপন্থী সাংবাদিক বা না কোন সাংবাদিকদের জাতীয় সংগঠনের মুখপাত্র এর বিরোধিতা করেছিল।

কেয়ার হোমগুলির চল্লিশ হাজার কর্মী যারা পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকার করেছিলেন, তাদের ছাঁটাই করা হয়েছিল। সেই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাজে পুনর্বহাল করার দাবিতে প্রচার অভিযান চলছে। এই কর্মীরা শ্রমিক আন্দোলনে মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, পাবলিক সার্ভিস ইউনিয়ন সংক্ষেপে ইউনিশন এই প্রচার অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে না। একেবারে তৃণমূল স্তরে শাসকের শ্রমিক বিদ্বেষী নীতির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে সেখানেও তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ে না।

লিথুয়ানিয়া এবং অস্ট্রিয়াতে যখন টিকাহীন সংখ্যালঘুরা নব্য ফ্যাসিবাদীদের কোভিড বিধি-নিয়মের চাপে প্রায় সমাজচ্যুত হচ্ছেন, তখন আন্তর্জাতিকতাবাদের গরিমায় উদ্ধত বামেরা গৃহের অন্তরালে থাকা ই শ্রেষ্ঠ পন্থা বলে মেনে নিয়েছিল। ফ্যাসিবাদী এই হামলার বিরুদ্ধে কোন স্বাক্ষর অভিযান, কোন সতর্কবার্তা এমনকি কোন সলিডারিটি হ্যাশট্যাগ পর্যন্ত দেখা যায়নি। এমনকি শিল্প ক্ষেত্রগুলিতেও যে প্রতিবাদ দৃশ্যমান হচ্ছিল তাতেও বামেদের কোন হেলদোল দেখা যাচ্ছিল না। গ্রীন-পাসের বিরুদ্ধে ইতালিয় বন্দর শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছিলেন তার সম্পর্কে বামপন্থী পত্রিকা মর্নিংস্টার ( যা আগে গ্রেট ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ছিল) একটি শব্দ পর্যন্ত খরচ করেনি। জঙ্গিপনার দিক থেকে বন্দর শ্রমিকদের এই আন্দোলনেের প্রভাব ছিল সুবিশাল। ত্রিশতে সহ অন্যান্য বন্দরে এই আন্দোলনের গণভিত্তি ছিল ব্যাপকতর। তবু বামপন্থী পত্রিকাগুলি এই আন্দোলনের খবর ছাপার জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করত না।

                 


বহু বছর ধরে আমরা দেখে আসছি, কখনো জাতিবিদ্বেষ, কখনো ট্রাম্প, আবার কখনো কোন দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধের অঙ্গীকার দেখা যায়। আশ্চর্যের বিষয়, যখন ভ্যাকসিন নিয়ে বিদ্বেষ ও বিভেদ ছড়ানো শুরু হল তখন কিন্তু এই প্রতিবাদীরা গা ঝাড়া দিয়ে উঠলেন না।

সমস্যা এটা ছিল না যে লকডাউনের সময় বামেরা প্রতিবাদে সামিল হয়নি। সমস্যাটা ছিল যে, তারা প্রতিবাদের জন্য সেই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া অন্য কোন কিছু বেছে নিচ্ছিল। জর্জ ফ্লয়েড এর মৃত্যুর প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছিল, কিন্তু কোভিড প্রকল্পের বিরোধী তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির রহস্যজনক মৃত্যু তাদের বিচলিত করেনি।

অন্যদিকে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে তারা যে আন্দোলনের আঙ্গিক হাজির করেছিল, সেটাই যেন কোভিড কালে তাদের অবস্থানের ইঙ্গিতবাহী হয়ে রইল। শাসকের সামনে নতমস্তক এবং নতজানু।

পুলিশি ব্যবস্থা, নানা ধরনের অপরাধ, আদালতের বিভিন্ন আইন এবং কঠোর সাজা ইত্যাদি নানা বিচিত্র বিষয়ে তারা প্রতিবাদে মুখর হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ আইনের নিপীড়নমূলক বিধি- নিয়মের বিরুদ্ধে তারা ছিল বিস্ময়কর ভাবে নীরব। এমনকি ট্র্যাক এন্ড ট্রেস নামের নতুন কৌশলে যখন রাষ্ট্রীয় নজরদারি ব্যবস্থা একেবারে ব্যক্তি পরিসরে হামলা শুরু করেছিল তখনও তারা ছিল অদ্ভুত ভাবে মৌন।

বামপন্থী পথের সাথীরা, পথকেই পুনরদখল করার জন্য সোচ্চার হয়েছিল কিন্তু যখন, বিধি- নিয়মের লৌহ কঠিন বেড়াজালে জনতার স্বাধীন চলাচল বিপর্যস্ত হলো, অবৈজ্ঞানিকভাবে স্কুলে শিশুদের বাধ্য করা হলো মুখোশ পরে থাকতে, জাতীয় স্তরের শিক্ষক সংগঠন যখন এই আত্ম-বিধ্বংসী নীতির কথা জোর গলায় প্রচার করতে লাগলো, তখনো বামেরা অদ্ভুতভাবে মৌন রইলো।

 

একবার নয়, বারবার বামেরা ভুল দিশার দিকে ছুটে গেল।

ইতিমধ্যে ২০২০ সালের গোঁড়াতেই লকডাউন বিরোধীরা রাস্তায় নেমে যখন প্রতিবাদ শুরু করছেন তখন থেকেই তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা, এমনকি আটক করা হচ্ছিল।

এই প্রতিবাদ গুলির যথেষ্ট রাজনৈতিক তাৎপর্য ছিল, তবু বামেদের কাছে এসব দৃশ্যমান হচ্ছিল না। উপরন্ত ,২০২০ সালের গ্রীষ্মকালে যখন এই আন্দোলন গুলোতে ব্যাপক জনতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেল তখন উদাসীনতার বদলে বামেরা কুৎসার আশ্রয় নিল। তার ই সাক্ষ্য বহন করছে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে বামপন্থী পত্রিকা সোশালিস্ট ওয়ার্কারে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে। বুদ্ধিজীবী সুলভ লেখনীতে বাস্তবের বিকৃত চিত্রায়ন ছিল এই নিবন্ধ। ‘ভ্যাকসিন বিরোধীদের পদযাত্রা - দক্ষিণপন্থী বিপদের ইঙ্গিত’- এই শিরোনামে তারা লিখেছিল যে "এন এইচ এস এর ১০০ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের প্রচারকে বিভিন্ন ছদ্মবেশী চরম দক্ষিণ পন্থী সংগঠন কাজে লাগাচ্ছে এবং চক্রান্ততত্ত্বের ভিত্তিতে তারা এমন একটি আন্দোলনকে বৈধতা দিচ্ছে যার  শিকড় আসলে রয়েছে “ইহুদি বিদ্বেষী ভাবনার মধ্যে"।

দা মর্নিং স্টারের প্রতিবেদক ভ্যাকসিন বিরোধীদের গোঁড়া রোমান ক্যাথলিকদের দলভুক্ত বলে দেগে দিয়েছিল এবং ফ্যাসিবাদী মনস্তত্ত্ববিদ উইল হেল্ম রাইখ এর তত্ত্ব অনুযায়ী তাদের ফ্যাসিবাদের কাঁচামাল বলে অভিহিত করেছিল।

 

বিচিত্র বাইনারি: বাম অথবা ডান, ঠিক অথবা ভুল

‘সরল বিশ্বাসী জনগণের অভাব এবং অভিযোগ কে কাজে লাগিয়ে তাদের পথভ্রষ্ট করে চরম দক্ষিণ পন্থার দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি শয়তানী প্রচেষ্টা চলছে’। - এটাই ছিল বামেদের বাঁধা বুলি। সমস্ত লকডাউন বিরোধী এবং ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট বিরোধী প্রতিবাদ আন্দোলনকে তারা এই ভাষাতেই খারিজ করে দিত।

তাদের এই বক্তব্যই প্রমাণ করছিল যে, বামপন্থার পরিচিত আঙ্গিকের বাইরে গিয়ে এক নতুন ধরনের সামাজিক আন্দোলন বিকশিত হবার স্পর্ধা দেখাচ্ছে - এই সত্যকে স্বীকার করতে তাদের অনীহা রয়েছে।

প্রতিদিনকার বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা এবং বৌদ্ধিক বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে যারা এই সময়ের সত্যের অনুসন্ধানে ব্রতী হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে বামেদের অপরিসীম অবজ্ঞা ফুটে উঠছিল।

এইভাবে যা কিছু তাদের ধারণার সঙ্গে খাপ খায় না তাকেই দক্ষিণপন্থী বলে দাগিয়ে দেওয়ার কুৎসিত অভ্যাস, তাদের জন্য এমন একটি বর্ম তৈরি করল যার আড়ালে থেকে তারা আধুনিক কালের সর্ববৃহৎ গণ আন্দোলন থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতে পারলেন।

যা কিছু বাম ঐক্যমত্যের বিরোধী , সেটাই নাকি দক্ষিণ পন্থা। যে বৈজ্ঞানিক মতবাদ সমস্ত সন্দেহ এবং প্রশ্নের উর্ধ্বে বলে নিজেকে দাবী করে- তাকে বিরোধিতা করা দক্ষিণ পন্থা। লকডাউনের যুক্তি এবং বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা মানেই দক্ষিণ পন্থা। পরীক্ষামূলক জিন টিকা নিতে অস্বীকার করা মানেই দক্ষিণ পন্থা। এসবের কোন একটি বিরোধী অবস্থান মানে দক্ষিণ পন্থা। লন্ডনে লক্ষ লক্ষ লোকের মিছিলে হাঁটা দক্ষিণ পন্থা। কানাডায় ট্রাক চালকদের কনভয় এবং নিউজিল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী দের জমায়েত দক্ষিণ পন্থা। জবরদস্তি ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে নার্সদের প্রতিবাদ আন্দোলন- সবই দক্ষিণ পন্থা!

 

শাসকের অনুগত এই বাম মনোভাবে যা কিছু রাষ্ট্র এবং মিডিয়া পরিচালিত কোভিড আখ্যানের বিরুদ্ধে যায়, সেটাই ছিল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দক্ষিণ পন্থা।

এসব সত্ত্বেও আমাদের অনেকেই এই বাম বনাম ডান - নির্ধারক তত্ত্বের বাইরে গিয়ে সমস্ত বিষয়কে খোলা চোখে দেখার চেষ্টা করেছিলেন। ভ্যাকসিন বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে দক্ষিণপন্থী ভাবনার অনেক মানুষ ছিলেন- এ কথা সত্য। তা সত্ত্বেও এটা ছিল জনপ্রিয় গণ-আন্দোলনের এক সুবিশাল এবং নজিরবিহীন রূপ। যদি স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনকারীরা দক্ষিণ পন্থী নাও হয়ে থাকেন, বামেরা নিশ্চিত ভাবেই ছিল চরমতম ভুল পথের পথিক।

বাস্তবত: ইতালি, কানাডা , ব্রিটেন , নিউজিল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশে যে জনতার অভুত্থান দেখা গিয়েছিল তাতে একটা জিনিস প্রমাণিত হয়েছিল, দারিদ্র, অবিচার, জাতিবিদ্বেষ এবং যুদ্ধ ছাড়া আরেকটি জিনিসকে বামপন্থীরা সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে। সেটা হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণী যখন রাজনৈতিক সমাধানের ভার নিজের হাতে তুলে নেয়, তাদের সেই স্পর্ধিত প্রকাশভঙ্গি।

কোভিড কালে বামপন্থী রাজনৈতিক সক্রিয়তার সঙ্গে বাস্তব ক্ষেত্রে জন আন্দোলনের যে বিরাট ফারাক সৃষ্টি হচ্ছিল, এটা আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠলো ২০২১ এ লন্ডনে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতার মিছিলে। একই সময়ে পিপলস এসেম্বলি, কিল দা বিল এবং এক্সটিংশন রেবেলিয়ন- এইরকম বামপন্থী সংগঠনগুলো রাস্তায় নেমেছিল। স্বাধীনতাকামী মিছিলে লোকের সংখ্যা ছিল তাদের তুলনায় প্রায় ৭০ গুণ বেশি। শুধু তাই নয় বামেদের ম্যার-মেরে প্রচার অভিযানের তুলনায় স্বাধীনতাকামী দের মিছিল ছিল অনেক বেশি বর্ণময় এবং উৎসাহ উদ্দীপনা ও বক্তব্যের বৈচিত্র্যে অনেক বেশি প্রানচঞ্চল। স্বাধীনতার মিছিল ছিল প্রকৃত অর্থেই জনগণের উৎসব। সেখানে অনুভূত হচ্ছিল বিচিত্র-মুখী জীবনের স্পন্দন। উদ্বেলিত জনতার মধ্যে কোন কিছু আড়াল করার ভান ছিল না। এটাই হওয়া উচিত কোন গণআন্দোলনের মুক্ত এবং কাঙ্খিত অভিব্যক্তি।

 

বাম বিশ্ববীক্ষা: বাস্তব থেকে ক্রমশ দূরে

বামেরা শুধু সক্রিয় হতেই ব্যর্থ হয়নি। তারা ব্যর্থ হয়েছে কৌতুহলী এবং অনুসন্ধানী হতে। তারা ব্যর্থ হয়েছে প্রতিবাদী আখ্যানকে বুঝতে। তারা ব্যর্থ হয়েছে তাদের অনুসন্ধানী বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগাতে। কোভিড সম্পর্কে ক্ষমতার আখ্যানে যা বলা হয়েছে সেটাকে তারা বিনা প্রশ্নে মেনে নিয়েছে।

বামেরা কখনো প্রশ্ন তোলেনি কোভিড সংক্রমনে আসলে মৃত্যুহার কত? কত সাইকেল থ্রেশল্ড হলে পি-সি-আর পরীক্ষা গ্রহণযোগ্য হয়? যেভাবে কোভিড মৃত্যু গণনা করা হচ্ছে, তা কতটা সঠিক? কোভিড হলে, শুরুতেই যে সাধারণ চিকিৎসা হওয়া সম্ভব সেটাকে কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে? যেভাবে পরীক্ষার নামে জবরদস্তি করে নাকের ভেতরে একটি শলাকা ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে- তাতে আপত্তি থাকাটা কি অস্বাভাবিক? গণ-হারে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের পিছনে কোন বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে কি? যেভাবে বিদ্যুৎগতিতে ভ্যাকসিন বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হল তাতে সন্দেহ প্রকাশ করা কি অযৌক্তিক? এই জাতীয় কোন প্রশ্ন তোলা দূরে থাকুক, রাষ্ট্র এবং মিডিয়া চালিত আখ্যানের প্রতিটি শব্দকেই বামেরা নির্বিকার চিত্তে মেনে নিয়েছিল।

বামেরা কখনো প্রশ্ন তোলেনি কোভিড প্রকল্প এবং তার প্রচারে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, দা ওয়েলকাম ট্রাস্ট, ইকো health এলায়েন্স এবং গাভী( গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন্স এন্ড ইমিউনাইজেশন) এইসব শক্তিশালী ও অসরকারি সংস্থাগুলির ভূমিকা কি?

তারা কখনো ইভেন্ট ২০১ বিশ্লেষণ করে ভেবে দেখার কথা ভাবতেই পারে না। নীল ফার্গুসনের কম্পিউটার মডেলে যে বিরাট অসঙ্গতি এবং উদ্ভট তথ্য রয়েছে সেগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে এই বামেদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই।  জন মাগুফুলির মত কোভিড আখ্যান কে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন যে সমস্ত আফ্রিকান রাষ্ট্র নেতারা তাদের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে তারা অদ্ভুতভাবে নীরব।

সমাজ মাধ্যমে যেভাবে যেকোনো প্রতিবাদী ভাষ্যকেই সেন্সর করা হচ্ছে এবং মুছে দেওয়া হচ্ছে তাতে বামপন্থীরা মোটেই বিচলিত নয় কারণ তারা ধরেই নিয়েছেন যাদের এভাবে সেন্সর করা হচ্ছে সেই সমস্ত লেখক, বিজ্ঞানী এবং সমালোচকরা সকলেই দক্ষিণপন্থী। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এটা যে মুক্ত চিন্তার বিরোধী এই সমস্ত ধরনের কর্তৃত্ববাদ বামেদের চর্চার বিষয় বলে গণ্য হচ্ছে না।

বর্তমানে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনের কুপ্রভাবে যতই জনসাস্থ্যের ক্ষতিকর এবং বিপর্যয় প্রতিীয়মান হচ্ছে, অনেক চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞ যারা আগে ভ্যাকসিনের পক্ষে গোঁড়া অবস্থান নিয়েছিলেন তারা এখন অনেকেই তাদের মত বদল করছেন। ভ্যাকসিন পরবর্তী মৃত্যুর আধিক্য, ভ্যাকসিনের অকার্যকারিতা এবং অল্পবয়সী ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের মধ্যে বেড়ে চলা মায়োকার্ডাইটিস ( হৃদ যন্ত্রের প্রদাহ) - এসব বিষয়ে যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ উঠে আসছে সেগুলো সম্পর্কে বামেদের জানার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। ডক্টর অসীম মালহোত্রা এবং অধ্যাপক ডলগেইস যে সমস্ত সত্য উদঘাটন করছেন তাতে কান দেবার কোন ফুরসৎ বামেদের নেই। ভ্যাকসিন নেবার পর যে হাজার হাজার মানুষ চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন সেইসব মৃত অথবা জীবিত মানুষদের জন্য বিন্দুমাত্র সহমর্মিতা দেখাতে এই বামেরা ব্যর্থ হয়েছেন।

 

এইসব বামেদের ধিক!

সমসাময়িক কালের প্রেক্ষাপটে যে অনবদ্য ইতিহাস রচিত হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া থেকে বামেরা নিজেদের সম্পূর্ণভাবে বিযুক্ত রেখেছে। গণআন্দোলনের এমন অভিনব এবং সৃষ্টিশীল প্রকাশভঙ্গি দেখেও গত তিন বছরে তাদের হতশ্রী অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। যে লক্ষ লক্ষ জনতা ক্রোধে গর্জে উঠেছেন, অন্যদের সংগঠিত করেছেন কিংবা পথে প্রান্তরে নেমেছেন- তাদের অনেকেই হয়ত প্রথমবার জীবনে কোন আন্দোলনের শরিক হয়েছেন। নতুন আঙ্গিকে ভাবনার একটি রোমাঞ্চকর ঢেউ বয়ে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতার আন্দোলন যতই বিক্ষিপ্ত এবং বিচিত্র-মুখী হোক না কেন, বিপ্লবের তত্ত্বে এবং অনুশীলনে যারা আস্থাশীল তাদের কাছে এক শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকছে। কোটি কোটি মানুষ জেগে উঠেছেন এবং আমাদের বিশ্বাস তারা আর কখনো পুরনো পন্থার ভাবনায় ফিরে যাবেন না। এসবই কিন্তু ঘটছে বামপন্থার কল্পিত গণ্ডির বাইরে গিয়ে।

যখন বাইরের পৃথিবীতে নতুন এক বিপ্লবী সম্ভাবনা জন্ম নিচ্ছে তখন বামেরা তাদের চিরাচরিত আদব কায়দায় নিশ্চল রয়েছেন। তাদের পরিচিত আদব কায়দা এখন শত ছিন্ন, ক্লান্ত এবং বিচ্ছিন্ন ও বিপর্যস্ত।

ইতিহাসের কি নির্মম পরিহাস যে  চক্রান্ত তত্ত্বের সমর্থক বলে নিন্দিত দা লাইট পত্রিকা এখন অবিসংবাদিতভাবে মুক্তমনা, উজ্জীবিত, সাহসী, প্রেরণার উৎস এবং সর্বোপরি সঠিক অর্থেই বৈপ্লবিক। বামপন্থী পত্র-পত্রিকার চেয়ে তাদের পাঠক সংখ্যা এখন অনেক অনেক বেশি। শাসক শ্রেণী সম্পর্কে তাদের বিশ্লেষণ অনেক বেশি নিখুঁত এবং ধারালো।

মর্নিং স্টার এবং সোশ্যালিস্ট ওয়ার্কার এর মত বামপন্থী পত্রপত্রিকাগুলি সাধারণত যেসব বিষয় নিয়ে কখনোই লেখেনা সেগুলো হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ডিজিটাল মুদ্র্‌ যন্ত্র-কুশলীদের একনায়কত্ব, মেডিকেল ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম। তারা কখনো অর্থনৈতিকভাবে বিশ্লেষণ করে দেখায়নি কোভিড প্রকল্পের অর্থনৈতিক বনিয়াদ কি ছিল।

কখনোই বলা যাবে না মূল ধারার দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট অথবা বিবিসির থেকে এই বামেরা অনেক বেশি প্রগতিশীল।

একটি নতুন প্রজন্মের সাংবাদিক , বিশ্লেষক এবং ভাষ্যকাররা উঠে আসছেন যারা বর্তমান বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত মূল্যবান এবং তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন তুলে ধরছেন। দেখার বিষয় হল এই নতুন প্রজন্মের বুদ্ধিজীবীদের কেউই বামপন্থার চিরাচরিত দৃষ্টিভঙ্গির কাছে দায়বদ্ধ নয়। শ্রেণী সংগ্রামে তারা কতটা আছেন বা নেই এইরকম সেকেলে ভাবনা থেকে তারা মুক্ত।

বর্তমানে শিল্পক্ষেত্রে যে অসন্তোষ এবং সক্রিয় প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে, প্রধানতঃ তার মূলে রয়েছে সেই উন্মত্ত রাষ্ট্রীয় নীতি যাকে বামেরা ২০২০ সাল থেকেই সমর্থন করে আসছে। তিন বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আধুনিক কালের ইতিহাসে শ্রমিক শ্রেণীর বিরুদ্ধে সর্ববৃহৎ আক্রমণের উত্তরের বামেরা তাদের লাল টুপির বদলে আনুগত্যের নীল মুখোশ মুখে এঁটে নিয়েছে। বিচার বিবেচনার এই ধ্বংসাত্মক ভুলের পর প্রশ্নটা থাকছে না বামেদের পুনর্জাগরণ হবে কিনা। বরং প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে এইভাবে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা উচিত হবে কিনা।

 

 

------------------------------------শেষ---------------------------------------

মূল ইংরাজী নিবন্ধের লিঙ্কঃ

 

https://leftlockdownsceptics.com/the-left-and-covid-part-i-reflections-on-a-catastrophe/

 


 The Eye-opener is a blog that questions dominant narrative

চলতি আখ্যানকে প্রশ্ন করার জন্যই এই ব্লগ, দ্য আই-ওপেনার

We like to question & be questioned

প্রশ্নের আড়াল নয়, প্রশ্নের মুখোমুখি

send your write-up, comment or question

লিখুন, মতামত দিন, প্রশ্ন করুন 

eopener040@gmail.com


Comments

Popular posts from this blog