BANGLA            শয়তানের সাথে সন্ধি

                                                                                          Cartoon by PARTHA 

                                                - জয়দীপ

 

গত আড়াই বছর ধরে, ‘বৈশ্বিক অতিমারির’ নামে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্খার যে নেতৃত্বের ভূমিকায় আমরা অভ্যস্ত, তাতে একটি সত্য প্রকট। মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁদের কোন মাথাব্যাথা নেই। তাঁদের আছে একটি এজেণ্ডা বিশ্বাসযাগ্যতা হারিয়েও তাঁদের ঔদ্ধত্যের অধিকার দেখছি অপরিসীম। এই গ্রহের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চৌকিদারিত্ব করার মহান দণ্ড তাঁরা তুলে নিয়েছেন নিজেদের কাঁধে। বিল আ্যণ্ড মেলিন্দা গেটস ফাউণ্ডেশন থেকে অনুদানের সিংহভাগ যোগান হলে যা অনিবার্য। যুক্তি বিসর্জন দিতে হয়। বিজ্ঞানমনষ্কতা চলে যায় গভীর কোমায়। কাণ্ডজ্ঞান মানে তখন ‘চক্রান্ত তত্ত্ব’। উদ্বিগ্ন প্রশ্ন মানে ‘ভূয়ো তথ্য’।

 

যে অতিমারি চুক্তি নিয়ে এত কথা উঠেছে, যা ‘হু’ ১৯৪’টি দেশকে স্বাক্ষর করাবার প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে ভয় পাওয়ার মত কি আছে? সেই বিষয়ে ঢোকার আগে একবার কিছুটা হাল্কা চোখ বুলিয়ে নেওয়া যেতে পারে, গত কয়েক বছরে অতিমারি নিয়ন্ত্রণের নামে কতটা নির্লজ্জ ও অভূতপূর্ব প্রহসন সংঘঠিত হয়েছে গোটা বিশ্বে।

 

বৈশ্বিক অতিমারি কি আদৌ আছে?

‘হু’এর নতুন হাস্যকর সংজ্ঞা অনুযায়ী - আছে।

প্রচলিত সাধারণ ধারণা অনুযায়ী - নেই।

 

ভাইরাস কি আছে?

আছে।

প্রাকৃতিক?

না।

এটি কি ঘাতক?

একেবারেই না।

মাস্ক পরলে কিছু সুবিধে হয়?

না। বরং ভাল’র থেকে ক্ষতি বেশি হয়।

সামাজিক দুরত্ব রক্ষা করার কোন প্রয়োজন ছিল কি সংক্রমণের গতি থমকে দিতে?

না। এই বিধি এক কৌশল যাতে আমাদের সন্ত্রস্ত করে রাখা যায়, আমাদের মধ্যে বিভাজন ঘটানো যায়, বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া যায় ও আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

লকডাউনে কোন কাজ হয়েছে?

না। লকডাউন এক মহড়া বিশ্ব ব্যবস্থাকে উল্টে দেওয়ার। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও কৃষির ক্ষেত্রে।

 

ভ্যাকসিন কতটা কার্যকারী?

সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও বিপজ্জনক। রোগ ঠেকানোর সাথে আদৌ তার কোন সম্পর্ক ছিল না। গোড়া থেকেই এই পরিকল্পনার এক প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল এক ধরনের ‘ভ্যাকসিন প্রশাসন’ কায়েম করা। যাতে জনসংখ্যার এক বিরাট অংশকে মুছে দেওয়া যায়। নবীন প্রজন্মের প্রজনন শক্তি নষ্ট করে দেওয়া যায়। শরীরের স্বাভাবিক রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিয়ে মানুষকে অসহায়ের মত ওষুধ-নির্ভর করে তোলা যায়। মানুষকে রূপান্তর করা ‘জৈবিক যন্ত্র’তে যাতে গোটা বিশ্বের মানবজাতির শরীর ও মস্তিষ্ক হয়ে ওঠে পণ্যের ইন্টারনেট। মানুষের স্বাতন্ত্র ও স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া, হরণ করা নিজস্ব মালিকানা ও আত্মবিশ্বাস। 

 

এই প্রেক্ষিতেই দেখতে হবে প্রস্তাবিত চুক্তির মূল মতলবটিকে। বৈশ্বিক ক্রীতদাসত্ব’কে আইনি বৈধতা দেওয়া। এই উদ্যোগ আজকের নয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরেই ১৯৪’টি সদস্য রাষ্ট্র একমত হন যে একটি বিশ্ব অতিমারি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে হবে ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে। সেই চুক্তি অনুযায়ী ‘ঘোষিত’ অতিমারি চলাকালীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্খার চোখ রাঙানি, হুকুম, দণ্ড ও নিষেধ সব দেশের সকল নাগরিক মানতে বাধ্য। চুলোয় যাক রাষ্টের সার্বভৌমত্ব, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, নাগরিক স্বাধীনতা। ‘হু’ ইতিমধ্যেই নিজেদের তুঘলকী স্পর্ধা দেখিয়ে দিয়েছেন, যতদিন ইচ্ছা তাঁরা চালিয়ে যাবেন এই ‘অতিমারি-কাল’, যখন খুশি ঘোষণা করতে পারবেন নতুন অতিমারি, কোন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের তোয়াক্কা না ক’রে। ভাবী সমস্ত মানবকৃত অতিমারির কথা মাথায় রেখে ইওরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ব্রিটেন সহ ৭০’টি দেশ চাইছে সংক্রমণের বিরুদ্ধে আরও ‘জোরালো প্রতিক্রয়া’, যার অর্থ একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যার আইনি ফাঁস থেকে কেউ বেরুতে পারবে না। একটু অন্য ভাষায় বললে, আপনার আমার জীবন দুর্বিষহ করে তুলতে কর্তৃপক্ষের হাতে এসে যাবে অপরিসীম ক্ষমতা। ভারত, ব্রাজিল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত কয়েকটি দেশ আইনি নাগপাশে বন্দি কোন চুক্তিতে সই করতে ‘অনিচ্ছা’ প্রকাশ করছে। কিন্তু ‘অনিচ্ছা’ ও ‘প্রবল বিরোধ’ এক কথা নয়। আমাদের সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত যাতে তাঁরা কোনভাবেই আন্তর্জাতিক চোখ-রাঙানিতে নতিস্বীকার না করেন।

 

এই প্রস্তাবিত চুক্তিটি এমন ত্রাসের কারণ কেন?

কারণ এই চুক্তি একটি পরীক্ষণমূলক প্রথম পদক্ষেপ, স্বৈরাচারী, কঠোর ও নির্মম এক বিশ্ব এক শাসন কায়েম করার। হাতে গোণা কয়েকটি ধনকুবেরের তালুবন্দি হবে এই গ্রহ, এবং রাষ্ট্র-ব্যবস্থা, গণতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা ও মিডিয়া চোখের সামনে দুলবে রিয়ালিটি শোয়ের ভাঁড় হয়ে।

 

চব্বিশ ঘন্টা চলবে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনে ফাঁদ পাতা হবে নয়ত মুছে দেওয়া হবে মানুষকে, তখন রক্তে ঘুরবে মাইক্রোচিপ ও মস্তিষ্কে ভাসবে নিউরোলিঙ্ক। ব্যক্তিগত মালিকানা তখন অতীতের রূপকথা। নিজেদের শরীরের উপরেই তখন আর আমাদের কোন অধিকার থাকবে না। আমরা তখন যেন স্ক্রীনের উপর কোন ভিডিও গেমের নকল পাত্রপাত্রী। বাঁচতে গেলে বর্জন করতে হবে স্বাতন্ত্র্য, স্ব-ইচ্ছা। পুরোদমে শুরু হবে রাসায়নিক ভোজনের যুগ, অনলাইন চিকিৎসা পরিষেবা, এবং অবশ্যই সফটওয়্যার চালিত গৃহকোণ শিক্ষাব্যবস্থা, বিদ্যালয় ভবন ও খেলার মাঠগুলি হয়ে উঠবে হারিয়ে যাওয়া যুগের নিদর্শন। অমান্য করা বা বিরোধ করার কোন অবকাশই নেই। শুরুতেই টিকাকরণে অনিচ্ছুক সকলকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে ডিজিটাল অরণ্যের বাইরে। যার অর্থ, ফোন বন্ধ, বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, অধিকার নেই ট্রেনের টিকিট কাটার, ব্যাঙ্কে টাকা রাখার, দোকান থেকে সামগ্রী কেনার, অনলাইনে বিল মেটাতে পারবেন না, ছবির প্রেক্ষাগৃহে, হোটেলে, রেস্তরাঁয়, গানের আসরে, পার্কে, যাদুঘরে প্রবেশ নিষেধ। যাঁরা বাধ্য আপোসকামী, তাঁদের হাতে থাকবে ডিজিটাল আইডি। সেই আইডি তাঁদের দেবে এক মেকী স্বাধীনতা ও তথাকথিত সুযোগ-সুবিধার মায়াবী হাতছানি যতদিন তাঁরা উপযোগী থাকবেন সেই কৃত্রিম যন্ত্র চেতনার জগতে।

 

 একটা উদাহরণ; ফার্মা লবি ইদানীং এত শক্তিশালী ও দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে যে তথাকথিত নারীবাদের আধুনিক ও উগ্র সংস্করণ’কে তারা ক্রমাগত পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। এই নির্লজ্জ নারীবাদ এখন আর জৈবিক সহজাত নারীর পক্ষে নয়, ভীষণভাবে রূপান্তরকামীর পক্ষে। কারণ? কারণ রূপান্তর প্রক্রিয়ায় বহুকাল জটিল চিকিৎসাব্যবস্থার অধীনে থাকতে হয়, বহুবার অস্ত্রোপচার করাতে হয়। যার অর্থ, ফার্মা কোম্পানির বিপুল মুনাফা। আরও আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই কৃত্রিম রূপান্তরের পরিণতি করুণ। রূগীর জীবন হয়ে ওঠে তিক্ত ও অবসাদগ্রস্ত, দেহে বাসা বাঁধে নানা জটিল ব্যাধি। তার মানে আরও ওষুধ, ক্ষণে ক্ষণে হাসপাতালে ভর্তি, আজীবন আক্রান্ত। বিশ্ব অর্থনৈতিক সংস্থা (The World Economic Forum), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, রাষ্ট্রপুঞ্জ (The UNO) এবং আরও যাবতীয় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি এখন একই লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে চলেছে। তাদের লেজে ঝুলে আছে মূলস্রোত ও সোশাল মিডিয়া যারা রোজ তৈরি করছে অগুন্তি আধুনিক আখ্যান যাতে গোটা মানবজাতিকে সরিয়ে নেওয়া যায় মহাপ্রকৃতি থেকে।

 

আমরা যখন সরে যাই মাটি থেকে, জল থেকে, সুর্য থেকে, বৃক্ষ থেকে, পর্বত থেকে, জীবজন্তু থেকে, যখন সরে যাই কীট পতঙ্গ প্রজাপতি থেকে, প্রথম বৃষ্টির গন্ধ থেকে তখন আমরা সরে যাই আপন শরীরের প্রাচীন ভাষা থেকে, মনের সূক্ষ্ম অনুভূতি থেকে, অকারণ বন্ধুত্ব ও ভাগ করে নেওয়ার স্পৃহা থেকে, সহানুভূতি ও বিশ্বাস থেকে, আমরা সরে যাই একে অপরের থেকে, নিজেদের স্বভাব ও সত্তা থেকে। আমরা শুধু ঘুরে বেড়াই ছায়ার মত একরাশ কৃত্রিম মতবাদ কুলির মত মাথায় চাপিয়ে। ক্রমশ হয়ে উঠি শোষণ ও শাসনের ঊর্বর ভূমি। মানুষে মানুষে ফাটল তৈরি হয়। ঠিক এমনটাই লক্ষ্য পর্দার অন্তরালে অদৃশ্য শাসকের। এই অশুভ উদ্দেশ্য লুকানো থাকবে চুক্তির কিছু সুখশ্রাব্য আপাত-মহত শব্দের পিছনে, যেমন ‘প্রস্তুতি’, ‘সাবধানতা’, ‘নিরাপত্তা’, ‘প্রতিরোধ’, যেন ‘বহুজন হিতায়’ এক বৈপ্লবিক উদ্যোগ।

 

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, ‘এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন না’। কিন্তু আমাদের মন একইসাথে সন্দিগ্ধ, কতটা স্বাধীন আমাদের সরকার? বা যে কোন দেশের যে কোন সরকার? এই মূহূর্তে তো গেটস সাহেব স্বয়ং ভারতে ব্যস্ত, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় তিনি যারপরনাই সন্তুষ্ট, খুব দ্রুত সদর্থক পদক্ষেপ নিয়ে বাকিদের কাছে নাকি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন জাতীয় সরকার। গোটা বিশ্বে একটাও প্রধান রাজনৈতিক দলের তো নামও মনে পড়ছে না যাঁরা গত আড়াই বছরে এই স্বাস্থ্য সংকট নাটকের বিরুদ্ধে কোন কথা বলেছেন বা একটাও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছেন? গণতন্ত্র মানে কি? নির্বাচন জিতে ক্ষমতায় এস বা ক্ষমতা ধরে রাখো। দলগুলিকে পয়সা কারা দেয়? কারা মিডিয়াকে লেলিয়ে দেয় কারুর সভাকবি হতে অথবা কারুর নামে কুৎসার ছাই ওড়াতে? কারা টাকা ঢালে নামী দামী সংস্থা ও সংগঠনের প্রকল্পে?

 

বরং সবকিছু দেখে শুনে মনে হচ্ছে যে সংঘাত আরও অনেকগুলি স্তরে চলছে একই সাথে যা এই বৈশ্বিক চক্রান্তকে চ্যালেঞ্জ করে চলেছে সূক্ষ্মভাবে। এখন যেমন সবাই বুঝে গেছেন যে ইউক্রেনের যুদ্ধে ইউক্রেন দেশটির আত্মপ্রতিষ্ঠার কোন বালাই নেই। এর মূল কারিগর মার্কিন মিলিটারি-ইন্ডাস্ট্রিয়াল আঁতাত। বাম-মার্কিন প্রতিষ্ঠিত ইউক্রেনের পুতুল সরকারের সমর্থনে যত সামরিক অনুদান ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়ছে তাতে মুনাফায় লাল হচ্ছে কারা? মার্কিন ও ইওরোপিয়ান অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙেও তাই এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে কোন বিবেক দংশন নেই। ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক গুরু, আ্যলেকজ্যাণ্ডার দুগিন দ্ব্যর্থহীন ভাষাতেই বলেছেন, ‘একমেরু বিশ্ব রচনার পশ্চিমী প্রয়াস আমরা মেনে নেব না’। দাঁড়িপাল্লার কাঁটা যে উল্টোদিকে হেলতে শুরু করেছে, সভ্যতার আধিপত্য যে অবশেষে শ্বেতাঙ্গ পশ্চিম থেকে এশিয়া ও আফ্রিকার দিকে ঝুঁকছে, এই টানাপোড়েন থেকে একটাই ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছে, হীরক রাজাকে এবার মাঠে নেমে এসে দড়ি টানতে হবে।

 

দিন কয়েক আগে চীনের বিদেশমন্ত্রকের ওয়েবসাইটে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছে। সেই রচনায় ‘অতিরিক্ত পশ্চিমী দাপট ও আধিপত্য’কে খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সেই ওয়েবসাইটের মতে এতকাল চীন’কে গোটা বিশ্বের পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল বলে ভুলিয়ে রাখা হয়েছিল। বাস্তবে চীন হয়ে উঠেছে পাশ্চাত্যের সস্তা ‘শ্রমিক বাজার’। আরও বলা হয়েছে যে মার্কিন ডলারের একাধিপত্য আসলে নির্মম শোষণের চতুর হাতিয়ার।

 

এর পরিণাম? বেশ কিছু দেশ প্রক্যাশ্যে এখন আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের বিকল্প নিয়ে সওয়াল করছে। আগামী আগস্টের ব্রিকস সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে শুধু আলোচনাই হবে না, প্রাথমিক রূপরেখা নির্ণয় করার চেষ্টাও হবে। মজার কথা হোল, সৌদি আরব, যে দেশে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি টহলদারি করে, তারাও বিকল্প মুদ্রায় তেল বিক্রি করতে প্রস্তুত। এই বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের মৌনতা কানে একটু বেসুরো লাগছে। মার্কিন ডীপ স্টেট হয় হাল ছেড়ে দিয়েছেন, মেনে নিয়েছেন যে দেশের অর্থনৈতিক পতন ঠেকানো যাবে না, নয় তাঁরাও এই নতুন অভিসন্ধির শরিক। তাঁদের একবিশ্ব সমীকরণে সম্ভবত স্বদেশ ও সমাজ নিয়ে কোন আবেগ নেই। আমরা অবশ্য এইটুকু জানতে পেরেছি যে কানাডার বিস্তৃত অঞ্চলে মার্কিন উদ্যোগে খনন চলছে সোনার সন্ধানে।

 

এই সকল সংঘাতের পারদ ক্রমশ বর্ধিত হবে আগামী দিনগুলিতে। কঠিন সময় আসছে। যুদ্ধ, বিগ্রহ, পরিবেশ সংকট, কল্পিত অতিমারি, ভ্যাকসিন অভিযানের তাণ্ডব চেনা জগতটিকে ছিন্নভিন্ন করবে। পুরাতন’কে সরে যেতে হবে নুতন’কে জায়গা দিতে। এক ভীষণ যুদ্ধের মধ্যেই আছি আমরা, যত না রাষ্ট্রিক ও রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশি আকাঙক্ষার ও অস্তিত্ব রক্ষার। এ যুদ্ধ পাশ্চাত্য বনাম প্রাচ্যের, মিথ্যা ইতিহাস ও মেকী আখ্যান বনাম সত্যের, প্রকৃত বিজ্ঞান বনাম ভূয়ো প্রচারের, প্রকৃতি বনাম কৃত্রিমতার, বৈচিত্র বনাম বৈষম্যের, সহজ সরল মানবিক মূল্যবোধ বনাম উন্মাদ ধ্বংসাত্মক লোভের।

লেখক পরিচিতি:


যদিও তিনি জয়দীপ মহারাজ নামে অনেক বেশি পরিচিত তবুও শুধু জয়দীপ নামেই তিনি লেখক হিসেবে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। ১৯৬২ সালে জার্মানির লুইবেকে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাস করেন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি স্ট্যান্ডার্ড এন্ড চার্টার্ড ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তারপর স্বামী পরমানন্দের সংস্পর্শে এসে নতুন জীবনাদর্শে অনুপ্রাণিত হন। ১৯৯১ সালে তিনি আধ্যাত্বিক প্রচারের কাজে নিযুক্ত হন এবং ক্রমে একজন আধ্যাত্মিক বিষয়ের শিক্ষক, প্রচারক এবং লেখক হয়ে ওঠেন। নাট্য প্রেমী হিসেবেও তিনি সুপরিচিত। তার রচিত, অভিনীত এবং নির্দেশিত একাধিক বাংলা ও ইংরেজি নাটক রয়েছে। ২০০৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মরমীয়া, যা আমাদের দেশের এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের যুব সম্প্রদায়কে একটি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার গন্তব্যস্থল হিসেবে আকৃষ্ট করে চলেছে। দর্শন, অধ্যাত্মবাদ, জীবনশৈলী, মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং ইতিহাস, বিজ্ঞান ও রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের ত্রুটিপূর্ণ ধারণা সম্পর্কে তিনি অসংখ্য বক্তৃতা দিয়েছেন যা বহু মানুষকে মুগ্ধ করেছে। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে তথাকথিত প্যান্ডেমিক শুরু হবার সময় থেকেই তিনি নির্ভীকভাবে বক্তব্য রেখেছেন এবং নিবন্ধ লিখেছেন যা প্যানডেমিক - রহস্যের অনেক বিষয় উন্মোচিত করেছে। তিনি মনে করেন এই প্যান্ডেমিক আসলে একটি বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্র। প্রকাশিত হওয়া তার জনপ্রিয় বইগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিন্তাভাবনা (বাংলা) কাল দ্রষ্টা (বাংলা) শিশুরাজ (বাংলা) মিস্টিক টেলস (ইংরেজি), দ্যা কলোনিয়াল ক্রস (ইংরেজি) এবং খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হতে চলেছে তার লেখা ‘মিথ্যার গদাই সত্যের সুচ’।

 

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog